TASAUF FOUNDATION

A Nonprofit & Nonpolitical Organization, Under Societies Registration Act 1860.

TASAUF FOUNDATION

A Nonprofit & Nonpolitical Organization, Under Societies Registration Act 1860.

Research & Programme

Research Center  on Quran, Hadith and Sufism: Research & Publication

Background for establish the Tasauf Foundation

 

তাসাউফ সমৃদ্ধ প্রকৃত ইসলাম

মহান আল্লাহ্ রাববুল আলামীন হযরত আদম (আঃ) এর মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের ধারাবাহিকতা শুরু করে এক লক্ষ চবিবশ হাজার নবী রাসূলদের মাধ্যমে সংস্কার ও পূনঃসংষ্কার করে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মাধ্যমে ‘‘ইসলাম ধর্মকে’’ সমগ্র মানবজাতির জন্য একটি চিরকল্যানকর পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হিসাবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আর এই ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে চারটি প্রধান মূলনীতির উপর যথাক্রমেঃ শরীয়ত, ত্বরীকত, হাকীকাত এবং মারেফাত। এই বিষয়ে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেনঃশরীয়ত আমার কথা, ত্বরীকত আমার কাজ, হাকীকাত আমার অবস্থা এবং মারেফাত আমার নিগূঢ় রহস্য।এই চারটি মূলনীতিকে অনুসরণ করতে হলে ‘তাসাউফ’ জ্ঞান লাভ করা অত্যাবশ্যক। কেননা, তাসাউফ ব্যতীত ইসলাম ধর্ম নিরর্থক ও অসমাপ্ত অপরিপূর্ণ। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৬০৯ খৃষ্টাব্দে নবুয়ত প্রকাশ করেন এবং ৬৩২ খৃষ্টাব্দে এন্তেকাল করেন। ৬০৯ খৃষ্টাব্দ থেকে ৬৩২ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ ২৩ বছর ইসলাম ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত এবং পূর্ণতা দান করেন। এরপর খোলাফায়ে রাশেদীনগণ যথাক্রমে হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ), হযরত ওমর ফারুক (রাঃ), হযরত উসমান গনী (রাঃ) এবং হযরত আলী (রাঃ) পর্যায়ক্রমে ৬৩২ খৃষ্টাব্দ থেকে ৬৬১ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত মোট ৩০ বছর তাসাউফ সমৃদ্ধ ইসলাম ধর্মের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নবুয়ত প্রকাশের পর ২৩ বছর এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের ৩০ বছর সর্বমোট ৫৩ বছর ইসলাম ধর্ম তাসাউফ সাধনায় পরিপূর্ণ ছিল। এই ৫৩ বছরকে ইসলাম ধর্মের স্বর্ণ যুগ বলা হয়।

এজিদি ইসলামের আবির্ভাব

কিন্তু এরপর এজিদের পিতা হযরত আমীর মাবিয়া হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর দৌহিত্র ইমাম হাসান (রাঃ) এর কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তগত করে ৬৬১ খৃষ্টাব্দ হতে ৬৮০ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ২০ বছর ইসলামের শাসক হিসাবে ক্ষমতায় ছিলেন। তখন থেকে তারা তাসাউফ পরিপন্থি ইসলামের চর্চা শুরু করে। অতঃপর ৬৮০ খৃষ্টাব্দ হতে ৬৮৩ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ৩ বছর হযরত আমীর মাবিয়ার পুত্র দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী এজিদ ক্ষমতায় ছিল। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী এজিদ ৬৮০ খৃষ্টাব্দে কারবালার প্রান্তরে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রাঃ) এবং তার ৭২ জন সঙ্গীর বিরুদ্ধে ১২০০০ সৈন্য পরিচালনা করে তাঁদেরকে হত্যার মাধ্যমে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের মূল আকীদা প্রায় ভূলুন্ঠিত করে ও তাসাউফকে দাফন করে পৃথিবীর বুকে সন্ত্রাসী এজিদি ইসলাম কায়েম করে। বিখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনুত তিক্তাক বলেনঃ এজিদ ৩ বছর ৬ মাস রাজত্ব কালীন প্রথম বছরে হযরত আলীর (রাঃ) পুত্র ইমাম হোসাইন (রাঃ) কে হত্যা করে, দ্বিতীয় বছরে মদিনা শরীফ আক্রমন করে ধ্বংস সাধন করে এবং তৃতীয় বছরে কাবা শরীফ বিধস্ত করে। এজন্য তাফসীরে রুহুল বয়ানের লেখক  বলেনঃ এজিদকে যে মুসলিম কাফের বলে না এবং লানত বর্ষন করে না সে মুনাফেক। পরবর্তীতে এজিদের অনুসারী উমাইয়া খিলাফতের আরো ১২ জন শাসক ৬৮৩ খৃষ্টাব্দ হতে ৭৫০ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ৬৬ বছর এবং আববাসীয় খিলাফতের ৩৬ জন শাসক ৭৫০ খৃষ্টাব্দ হতে ১২৫৮ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ৫০৮ বছর শাসন ক্ষমতায় থেকে এজিদি ইসলামের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখে। বহু তাসাউফ পন্থি ইমামগণের আবির্ভাব হয়েছিল সে যুগে। তবে সত্যিকার ইসলাম ধর্মাবলম্বী তাসাউফপন্থি আলে রাসূলগণ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), বার ইমাম, মাযহাবের ইমামগণ ও ওলী আউলিয়াদের উপর এজিদ অনুসারীরা অত্যাচার নিপীড়ন, জুলুম ও আক্রমণের ধারা অব্যাহত রাখে। অনেকে শাসকদের অত্যাচারে শাহাদাৎ বরণ করেছেন। 

এজিদি ইসলামের ধারাবাহিকতায় ওহাবীদের আবির্ভাব

এজিদ ও তার বংশধরগণ তথা ওহাবী, খারেজী, গাংগুহী, নানতুবী ইত্যাদি বাতেল ফের্কা ইসলাম ধর্ম বিদ্বেষীদের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে আঘাত হানতে থাকে বিভিন্ন দেশের সরলপ্রাণ মুসলমান এবং আউলিয়া কিরামগণের উপর এবং তাদের আশেকগণের উপর। সুকৌশলে পরিবর্তন করতে থাকে ধর্মীয় কিতাবাদি এবং কিতাবের ব্যাখ্যা এবং ধ্বংস করে বহুবার তাসাউফের কিতাবাদি, ধ্বংস করে বহু ওলী-আউলিয়ার মাজার, আস্তানা, খানকাহ্। অপপ্রচারে লিপ্ত থাকে আউলিয়া কিরাম সম্পর্কে। শহরে-বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসায়, অফিসে-আদালতে গড়ে তোলে বাতেল আক্বিদাপন্থি এজিদি সমর্থক লোকজন, যাদের সক্রিয় মদদ যোগাচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষীগণ। দিনে দিনে ওহাবী ফের্কা প্রসারিত হয়ে আউলিয়া কেরামগণের উপর কাফের ফতোয়া দিয়ে এবং তাদের কাজ কর্মে বিদআত, শির্ক উচ্চারণ করে ধর্মপ্রাণ সহজ সরল মুসলমানগণের ঈমান আক্বিদা নষ্ট করার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সারা পৃথিবীতে এজিদি মৌলবাদী সন্ত্রাসের জাল বুনতে থাকে ফলে এজিদী চক্রের শয়তানী বেড়াজাল সমস্ত দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।ইসলামের নামে এজিদের সন্ত্রাসবাদ প্রচার, প্রসার ও কায়েম করতে থাকে।এজিদি মৌলবাদীদের ধর্মীয় অজ্ঞতা, তাওহীদ-শির্ক এবং ক্বোরআন হাদীসের অপব্যাখ্যা, কাঠমোল্লাদের আধ্যাত্মিকতা বর্জিত দৌরাত্ম, জ্ঞান বিজ্ঞানে অজ্ঞতা ইত্যাদি কারণে সারা বিশ্বে নৈতিক অবক্ষয়ের উপর বিকলাঙ্গ সমাজ গড়ে উঠেছে।

প্রকৃত ইসলামের পূনঃর্জাগরনে আহলে বেলায়ত বা তাসাউফ পন্থিদের ভূমিকা

অপর দিকে সীমাহীন অত্যাচার, নিপীড়ন ও জুলুম সহ্য করেও হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর বংশধরগণ প্রকৃত ইসলাম ও তাসাউফ চর্চা অব্যাহত রাখেন। ইমাম জয়নুল আবেদীন, ইমাম জাফর সাদেক থেকে শুরু করে শ্যায়খ সৈয়দ আবদূল কাদের জিলানী (রঃ), সুলতানুল হিন্দ খাজা মাইনুদ্দিন চিশতী (রঃ) সহ বহু ওলী আউলিয়া ও তাদের অনুসারীরা তাসাউফ চর্চা অব্যাহত রাখেন। কিন্তু আহলে বেলায়েত তথা তাসাউফপন্থিরা দরিদ্র, নিঃস্ব, নিরীহ ও সৎ জীবন যাপনের ফলে এজিদি ফেত্না রোধে কোন বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে পারেনি এবং ধর্মের সঠিক তত্ত্ব, আকিদা ও সঠিক বিধি-বিধান সর্বস্তরের মানুষের নিকট পৌঁছাতে পারেনি। আত্মমানবতার কল্যানে নিজেদেরকে উৎসর্গ করে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে সত্যিকারের ইসলামী আদর্শ পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে, আহলে বেলায়েতের ধারাবাহিকতা রক্ষার তাগিদে, আমরা ‘আহলে বেলায়ত পন্থিদের’ এ প্রয়াস।  তাই আমরা আহলে বেলায়তের মতাদর্শ ভিত্তিক কিছু কিতাব ও কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য আমাদের ইচ্ছা ও চেষ্টা রয়েছে। আর এ মহৎ কাজটি সমাপ্ত করতে আমাদের প্রয়োজন আনসারুল্লাহ্ অর্থাৎ আল্লাহ্র পথে সাহায্যকারী। তাই যুগের সকল তাসাঊফ পন্থি ওলী-আউলিয়া এবং আহলে বেলায়ত তথা তাসাউফপন্থিদের সার্বিক যোগাযোগ ও উৎসাহ কামনা করছি। আপনাদের সার্বিক সহযোগীতা পেলে আমরা ও আপনারা মিলে সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারবো।

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের প্রস্তাব

মানবতাকামী সার্বজনীন আদর্শ ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠায়, সন্ত্রাস মুক্ত এবং ধর্মীয় গোড়ামীমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায়, ব্যক্তিগত, সামাজিক ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠায়, শরিয়ত ত্বরিকত হাকিকাত ও মারেফাতের সমন্বয়ে আধ্যাত্বিক চেতনা সমৃদ্ধ ও ধর্মীয় সচেতনতায় সকল প্রকার নৈতিক অবক্ষয় রোধ, আত্মশুদ্ধি, সমাজ শুদ্ধি করাই আহলে বেলায়েত বা তাসাউফ পন্থিদের উদ্দেশ্য। পৃথিবীতে ইসলামের নামে এজিদি সন্ত্রাসবাদ দমন করতে, তাসাউফপন্থিদের প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। শুধুমাত্র আহলে বেলায়তের আদর্শই সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। তাই বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় যে কোন তাসাউফ পন্থি মানুষ আমাদের কার্যক্রমের সাথে সংযুক্ত হতে পারবেন।

‘‘যখন তাসাউফ প্রতিষ্ঠা হবে বিশ্বময়

তখন বিশ্বজগত হবে অপরাধমুক্ত শান্তিময়’’।