স্বনির্ভর বাংলা Swanirvar Bangla
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্ময়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বে নাম লিখিয়েছে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে এই দেশটি হতে যাচ্ছে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।
বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা মজবুত করতে হলে প্রতিটি মানুষকে হতে হবে স্বাবলম্বী ও স্বনির্ভর। কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য প্রতিটি খাতে নতুন নতুন উদ্ভবনা ও প্রচলিত পদ্ধতির সাথে নতুন ধ্যান ধারণা ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশকে বৃহৎ অর্থনীতির দেশে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সে লক্ষ্যে প্রতিটি মানুষকে হতে হবে একেকজন উদ্যোগক্তা এবং আত্মনির্ভরশীল। উপার্জনক্ষম সকল সদস্যকে দেশের চাহিদা ও উন্নয়নের সাথে সঙ্গতি রেখে ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প কর্মের সাথে যুক্ত হয়ে নতুন নতুন কাজের মাধ্যমে নিজেকে ও দেশকে সমৃদ্ধ করতে হবে।
আমাদের সমাজের শিক্ষিত যুবসমাজ যারা সঠিক দিক নির্দেশনা ও পুজির অভাবে বেকার জীবন যাপন করছে, অনেক মহিলা স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে অসহায় দূর্বিষহ জীবনযাপন করে এবং বয়স্ক অসহায় নারী-পুরুষ যাদের পাশে দাঁড়ানোর মত কেউ নাই, এই সকল মানুষকে আার্থিক ভাবে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে তাসাউফ ফাউন্ডেশন একটি প্রকল্প গ্রহন করেছে “স্বনির্ভর বাংলা”।
এ প্রকল্পের আওতায় যে সকল মানুষ অন্তর্ভুক্ত হবেন তাদের যোগ্যতাঃ
১। ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণী পাস
২। প্রাপ্ত বয়স্ক নারী পুরুষ
২।উদ্যমী ও নতুন কোন কাজের আগ্রহ/পরিকল্পনা রয়েছে
৩। অন্য কোন উৎস থেকে একই কাজের জন্য পূর্বে কোন অনুদান পায়নি
৪। বাংলাদেশী নাগরিক
৬। ইতোপূর্বে কোন অপরাধ কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার রেকর্ড নাই।
অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যে আবেদনকারী উল্লেখিত প্রাথমিক যোগ্যতার ভিত্তিতে পরিকল্পনা জমা দমা দিবেন। উল্লিখিত শর্তসমূহ যাচাই বাছাই করে ফাউন্ডেশেনর পরিচালনা পর্ষদ উদ্যোক্তা নির্বাচন করবেন ও অনুদান প্রদান করবেন।
কাজের অগ্রগতি ফাউন্ডেশেনর পক্ষ হতে পর্যবেক্ষণ করা হবে। কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক হলে ২য় ও ৩য় পর্যায়ে অনুদান পাবেন।
অনুদানের ঊৎসঃ স্বনির্ভর বাংলা প্রকল্পটি মূলত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বিকাশ, নগদ, উপায়, রকেট থেকে আগত অনুদান এবং তাসাউফ ফাউন্ডেশনের শুভাকাঙ্খী ও সদস্যদের অর্থায়নে।
বিকাশ, নগদ, উপায়, রকেট এর মাধ্যমে যারা তাসাউফ ফাউন্ডেশনকে সহযোগিতা করছেন তাদেরকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
স্বনির্ভর বাংলা প্রকল্প-১ মামুন এগ্রো
মোঃ বেলাল কেরানীগঞ্জ এর কাঠালতলী এলাকায় বসবাসকারী একজন শিক্ষিত যুবক। ২০০৯ সালে এসএসসি পাশ করার পর অনেক টাকা পয়সা ব্যায় করে বিদেশে চাকুরীর আশায় দেশত্যাগ করে। কিন্তু দালালের প্রতারণায় আবার দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। অতঃপর ছোট খাট কাজ ও ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করা ক্রমশঃই কঠিন হয়ে উঠছিল। ছেলেটি জীবিকার লড়াই এ কখনও হাল ছাড়েনি, এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়েছে গরু ছাগল লালনপালন পদ্ধতির এবং এ বিষয়ে সে কিছুটা জ্ঞান অর্জন করে গরুর খামার করার চিন্তা শুরু করে। কিন্তু খামার করার জন্য পুঁজি প্রয়োজন। পুঁজির আশায় যখন মোঃ বেলাল বিভিন্ন সংস্হার নিকট ঘুড়ছিল তখন সে তাসাউফ ফাউন্ডেশেনর করোনা মহামারীতে চাকুরীচ্যুত অসহায় পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি “পাশেই আছি” এর কার্যক্রম টেলিভিশন চ্যানেলে দেখে ফাউন্ডেশেনর সাথে যোগাযোগ করে। ফাউন্ডেশন মোঃ বেলালের আগ্রহ ও দক্ষতা যাচাই করে দুটো গাভী প্রদান করে তাকে স্বনির্ভর হওয়ার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়ায়। তাসাউফ ফাউন্ডেশন মোঃ বেলাল কে দুটি গাভী কেনার ও লালন পালন করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান করে। সে আশা করছে এই দুটি গাভী থেকে বছর ঘুরে অর্থ উপার্জন করবে এবং ধীরে ধীরে একটি বড় খামার তৈরী করবে। আমরা মোঃ বেলালের সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করছি এবং তাকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে সার্বিকভাবে সাহায্য করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করছি।
স্বনির্ভর বাংলা প্রকল্প-১ দেখতে ইউটিউব লিংকে ক্লিক করুন
স্বনির্ভর বাংলা প্রকল্প- ২
মোঃ বেলাল হোসেনের চা দোকান
আমাদের ফেসবুকের প্রকল্প ১ এর প্রচারণা দেখে চট্টগ্রামের মোঃ বেলাল হোসেন তাসাউফ ফাউন্ডেশনে আবেদন করেন । তাসাউফ ফাউন্ডেশন বেলাল হোসেনের ডাকে সাড়া দিয়ে পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলামকে পাঠিয়ে দেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউনিয়নের মাইজ ভান্ডার দরবার শরীফের গাউসিয়া ওহাব মঞ্জিলের উত্তর পূর্ব কোণায় মোঃ বেলাল হোসেনের চা দোকানে। কয়েক বছর বিদেশ থাকা এই বেলাল হোসেন আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে দোকান পরিচালনায় অসামর্থ ছিল। তাসাউফ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কমিটি সিদ্ধান্ত নেন যে, মোঃ বেলাল হোসেনকে আপতত নগদ বিশহাজার টাকা এবং একটি ফ্রিজ কিনে দিবে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তাসাউফ ফাউন্ডেশন পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলামকে মাইজ ভান্ডার দরবার শরীফ পাঠিয়ে প্রকল্প -২ বাস্তবায়ন করেন। আমরা মোঃ বেলালের সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করছি এবং তাকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে সার্বিকভাবে সাহায্য করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করছি।
স্বনির্ভর বাংলা প্রকল্প-২ দেখতে ইউটিউব লিংকে ক্লিক করুন
স্বনির্ভর বাংলা প্রকল্প-৩
মোঃ চান মিঞাকে কৃষি প্রকল্পের জন্য সহয়তা প্রদান
ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার বিরামপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক চান মিয়া। অন্যের জমি চাষ করে পরিবার নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে আক্রান্ত ছিলো তার জীবন। নিজের এক খন্ড ধানী জমির স্বপ্নই শুধু দেখেছেন কিন্তু তা বাস্তবায়নের কোনো আশা কখনো কোথাও থেকে পান নাই। তাসাউফ ফাউন্ডেশন অসহায় দরিদ্র মানুষকে সহায়তা করে শুনে আশায় বুক বাঁধেন চান মিয়া। সুযোগ করে আবেদন করেন। ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কমিটি চান মিয়ার আবেদনকে সহৃদয়তার সাথে বিবেচনা করে এবং তাকে এক খন্ড ধানী জমি কিনে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়। ২৬ মার্চের স্বাধীনতা দিবসে তাসাউফ ফাউন্ডেশন স্বনির্ভর বাংলা প্রকল্পের পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে যায়। অসহায় কৃষক চান মিয়াকে ধানী জমি কেনার জন্য নগদ ৬০০০০/ (ষাট হাজার) টাকা সহায়তা দেয়া হয়। চান মিয়া জানিয়েছেন তিনি এখন ভালো আছেন। নিজের জমিতে ফসল ফলান। তার খাদ্যাভাব আর নেই। তাসাউফ ফাউন্ডেশন চান মিয়ার পাশে সবসময় আছে এবং প্রয়োজনে আরো সাহায্যের অভিপ্রায় অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে।
স্বনির্ভর বাংলা প্রকল্প-৩ দেখতে ইউটিউব লিংকে ক্লিক করুন
স্বনির্ভর বাংলা প্রকল্প-৪
মোঃ আলম আলীর ভান্ডারী টেইলার্স এন্ড ফেব্রিকস।
ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার ঠাকুরবাড়ী মোড়ের মোঃ আলম আলী চাকরি করতেন একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে। স্ত্রী সন্তান নিয়ে ভালোই ছিলেন। কিন্তু ২০২০ সালে করোনার শুরুতেই চাকরি হারান তিনি। পরিবার পরিজন নিয়ে ভীষণ রকম বিপদে পড়ে যান। তাসাউফ ফাউন্ডেশনের স্বনির্ভর বাংলা প্রকল্পের খবর গ্রামে গঞ্জে অনেকের কাছেই এখন সুপরিচিত। এই বিষয়টি জেনে তার মনে আশার সঞ্চার হয়। তিনি তাসাউফ ফাউন্ডেশনে আবেদন করেন। তাসাউফ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কমিটি আলম আলীর আবেদনের প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেন যে, আলম আলীকে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে আলম আলীকে ৫০,০০০/=(পঞ্চাশ হাজার) টাকা নগদ প্রদান করা হয়। তাসাউফ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় আলম আলী ময়মনসিংহের ত্রিশালে ঠাকুরবাড়ী মোড়ে অবস্থিত হাজী কামাল উদ্দিন সুপার মার্কেটে একটি টেইলারিং শপ সহ গজ কাপড়ের দোকান দিয়েছে। তাসাউফ ফাউন্ডেশন আলম আলীর সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করে এবং তাকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে সার্বিকভাবে সাহায্য প্রদান করেছে।