TASAUF FOUNDATION

A Nonprofit & Nonpolitical Organization, Under Societies Registration Act 1860.

TASAUF FOUNDATION

A Nonprofit & Nonpolitical Organization, Under Societies Registration Act 1860.

Purification

এবাদাতের পূর্বশর্ত বিশুদ্ধতাঃ

আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا ليَعْبُدُونِي  ওয়ামা খালাক্বতুল জিন্না ওয়াল ইনছা ইল্লা লিয়া’বুদুন অর্থঃ আমার এবাদত করা ব্যতিরেকে মানুষ ও জ্বিনকে সৃষ্টি করি নাই (সূত্রঃ আল্ ক্বোরআন ৫১:৫৬)।  এ আয়াতের ব্যাখ্যায় অন্য আয়াতে বলেনঃ

وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ

অর্থঃ থচ তাদেকে তো কে (শুধুমাত্র) এই আদেশ প্রদান করা হয়েছিল যে, তারা বিশুদ্ধচিত্তে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে আর সালাত কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে, এটাই সঠিক দ্বীন বা ধর্ম (সূত্রঃ আল্-ক্বোরআন ৯৮:০৫)। এতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এবাদাতের পূর্বশর্ত (১) বিশুদ্ধচিত্ততা এবং (২) একাগ্রতা।

বিশুদ্ধচিত্ততা বা আত্মশুদ্ধি অর্জনে পবিত্রতাঃ

পবিত্রতা শব্দের আরবী যাকীযুন যা আল্‌ ক্বোরআনুল হাকীমে ৫৬ টি আয়াতের মধ্যে রয়েছে তৎমধ্যে যাকাত শব্দটি ৩০ টি আয়াতে ৩০ বার যাকাত এর বর্ণনা রয়েছে। আর পবিত্রতা নিয়ে আল্‌ ক্বোরআনুল হাকীমে ২৬ টি আয়াতে ২৯ বার পবিত্রতার এর বর্ণনা রয়েছে। আমরা এখানে পবিত্রতার পাঁচটি আয়াত উল্লেখ করলাম।

আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ قَدْ أَفْلَحَ مَنْ زَكَّاهَا  ক্বাদ আফলাহা মান- যাক্কাহা অর্থঃ অবশ্যই সফলকাম হয়েছে সে ব্যক্তি, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করেছে (সূত্রঃ আল্-ক্বোরআন ৯১:০৯)। আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেনঃ قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّى وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّى ক্বাদ আফলাহা মান- তাযাক্কা। ওয়া যাকারা ইসমা রাব্বিহি ফাসাল্লা। অর্থঃ নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করবে সে, যে আত্মশুদ্ধি লাভ করে এবং সে যিকির করে স্বীয় রবের নামে ও সালাত কায়েম করে (সূত্রঃ আল্-ক্বোরআন ৮৭:১৪-১৫)। আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেনঃ وَمَنْ تَزَكَّى فَإِنَّمَا يَتَزَكَّى لِنَفْسِهِ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ ওয়ামান তাযাক্কা ফাইন্নামা ইয়াতাযাক্কা লিনাফসি্‌; ওয়া ইলল্লা-হিল মাছীর। অর্থঃ আর যে কেউ নিজেকে পবিত্র করে, সে তো পরিশুদ্ধ করে নিজের নাফসের জন্য। আর এটাই আল্লাহরই কাছে সকলের প্রত্যাবর্তন (সূত্রঃ আল্-ক্বোরআন ৩৫:১৮)। অন্য আয়াতে বলেনঃ তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত না থাকলে তোমাদের কেউ কখনও পবিত্র হতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে পবিত্র করেন। আল্লাহ্ সবকিছু শুনেন, সবকিছু জানেন (সূত্রঃ আল্-ক্বোরআন ২৪:২১)। অতএব তোমরা নিজেদেরকে পবিত্র মনে কর না। তিনিই ভাল জানেন মোত্তাকী কে (সূত্রঃ আল্-ক্বোরআন ৫৩:৩২)? জান্নাতে প্রবেশের শর্ত দিয়ে আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেনঃ অনন্ত বাসের উপযোগী জান্নাত, প্রবাহিত হয় যার পাদদেশে নহরসমূহ, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এ পুরস্কার তাদেরই যারা পবিত্র-পরিশুদ্ধ থাকে (সূত্রঃ আল্-ক্বোরআন ২০:৭৬)।

যারা পবিত্রতা অর্জন করবে তারা উন্নত স্তর লাভ করবেঃ

আল্লাহ তায়ালা বলেন: لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَنْ طَبَقٍ লাতারকাবুন না ত্বাবাক্বান আন ত্বাবাক্ব। অর্থঃ অবশ্যই তোমরা এক স্তর থেকে অন্য স্তরে উত্তীর্ণ হবে (সূত্রঃ আল্‌ ক্বোরআন ৮৪:১৯)।

আর যারা অপবিত্র তারা থাকবে নিম্নতম অবস্থায়ঃ

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন: لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করেছি অতিশয় সুন্দর গঠনে (সূত্রঃ আল্‌ ক্বোরআন ৯৫:৪)। আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন: ثُمَّ رَدَدْنَاهُ أَسْفَلَ سَافِلِينَ অতঃপর আমি তাকে ফিরিয়ে দেই নিম্ন থেকে নিম্নতম অবস্থায় (সূত্রঃ আল্‌ ক্বোরআন ৯৫:৫)।

 উন্নত স্তরসমূহ কি কি?

১) নাফস আনিল হাওয়া বা শক্তিপ্রাপ্ত সুপ্ত আত্মা,

২) নাফসে আম্মারাহ বা মন্দকাজে প্ররোচনাকারী নাফস

৩) নাফসে লাওয়্যামা বা অনুশোচনাকারী নাফস

৪) নাফসে মূলহেমা বা প্রত্যাদেশ ও প্রজ্ঞাপ্রাপ্ত নাফস

৫) নাফসে মুত্বমাইন্নাহ বা প্রশান্ত নাফস

৬) নাফসে রাদ্বিয়া মারদ্বিয়া বা স্রষ্টার প্রকৃতির উপর সন্তুষ্ট নাফস

৭) নাফসে রহমানী বা স্রষ্টাতে প্রত্যাবর্তনীয় পরিপূর্ণ নাফস

 নিম্ন স্তরসমূহ কি?

আল্লাহ যে সমস্ত মানুষকে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত করবেন, তাদেরকে পশুতে পরিনত করবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيرًا مِنْ الْجِنِّ وَالْإِنسِ لَهُمْ قُلُوبٌ لَا يَفْقَهُونَ بِهَا وَلَهُمْ أَعْيُنٌ لَا يُبْصِرُونَ بِهَا وَلَهُمْ آذَانٌ لَا يَسْمَعُونَ بِهَا أُوْلَئِكَ كَالْأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ أُوْلَئِكَ هُمْ الْغَافِلُونَ 0

আর আমি সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য অধিকাংশ জিন এবং মানুষকে, যাদের অন্তর আছে বটে কিন্তু তা দিয়ে তারা বোঝে না, তাদের চোখ আছে কিন্তু তা দিয়ে তারা দেখে না, তাদের কান আছে কিন্তু তা দিয়ে তারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায়, বরং তারা তার চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই গাফেল উদাসীন (সূত্রঃ আল্ ক্বোরআন ০৭:১৭৯)।

পবিত্রতা পরিশুদ্ধতা অর্জনের তিনটি প্রক্রিয়াঃ

একঃ তাযকিয়াতুল জাসাদি বা শরীরের বাহ্যিক পবিত্রতা- যা ওযু গোসল ও তায়াম্মুম দ্বারা সম্পন্ন হয়।

দুইঃ তাযকিয়াতুল নাফস্ বা দেহের অভ্যন্তরীন পবিত্রতা- যা কুপ্রবৃত্তি দমন এবং হারাম বর্জন দ্বারা সম্পন্ন হয়।

তিনঃ তাযকিয়াতুল ক্বালব বা অন্তরের বা মনের পবিত্রতা- যা রাসূলের সিরাজাম মুনিরার নূরের প্রতিবিম্ব দ্বারা সম্পন্ন হয়।

 পবিত্রতা পরিশুদ্ধতার প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের রয়েছে উচ্চতর গবেষনা। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের মেডিটেশন করুন।