Green Bag Program for increasing wealth and attaining success in last Wednesday of every Arabic month.
আরবী সফর মাসের শেষ বুধবারকে আখেরি চাহার সোম্বা বলা হয়। তাই প্রতি হিজরি বর্ষের সফর মাসের শেষ বুধবার আখেরি চাহার সোম্বা। একাদশ হিজরির সফর মাসের ১৭ তারিখ রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোগাক্রান্ত হন এবং ৩০ শে সফর বুধবার মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জীবদ্দশায় এ দিন অসুস্থতা কাটিয়ে শেষবারের মতো সুস্থতাবোধ করলেন। এই দিনে রাসূলুল্লাহ (সঃ) রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। অসুস্থতার এই পর্যায় এসে ১১ই হিজরীর সফর মাসের শেষ দিনটি অর্থাৎ ৩০শে সফর বুধবার ভোর বেলাতে মহানবী (সাঃ) বেশ সুস্থতা অনুভব করলেন। ৩০ সফর সূর্যদয়ের পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোসল করেন, এই গোসলের ফলে রাসুল (সাঃ) এর পবিত্র দেহ মুবারক হতে বহু দিনের অসুস্থতাজনিত অবসাদ অনেকাংশে দূর হয়ে গেল। সুস্থ্যতা অনুভব করায় তিনি আপন নাতিদ্বয় হযরত ইমাম হাসান (রা.) এবং হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং মা ফাতেমা (রা.) কে ডেকে এনে তাঁদের সাথে রোগ মুক্তির খুশীতে আল্লাহর শোকরিয়া আদায়ে নিজ আওলাদগণের সাথে সকালের নাস্তা করেন। হযরত বেলাল (রা.) এবং আসহাবে সুফফাগণ বিদ্যুৎ বেগে এ সুসংবাদ মদিনার ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেন। এ সুসংবাদে সাহাবায়েকেরামদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। তারা বাঁধ ভাঙ্গা স্রোতের ন্যায় দলে দলে এসে হুজুর (সঃ)-কে এক নজর দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেন। হুজুর (দ.)-এর রোগমুক্তিতে সাহাবায়েকেরামগণ এতটাই খুশী হয়েছিলেন যে, অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে বহু দান-খয়রাত, নফল এবাদত বন্দেগী শুরু করেন। প্রান প্রিয় রাসুলের (সাঃ) রোগমুক্তিতে তাঁর সাহাবীরা এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে, তাদের কেউ দাস মুক্ত করে দিলেন, কেউবা অর্থ বা উট দান করলেন। যেমন, হযরত আবু বকর (রা.) পাঁচ হাজার দিরহাম, হযরত ওমর (রা.) সাত হাজার দিরহাম, হযরত ওসমান (রা.) দশ হাজার দিরহাম, হযরত আলী (র.) তিন হাজার দেরহাম এবং আবদুর রহমান (রা.) ১০০ উট, ইবনে আউফ (রা.) ১০০ উট দান করেন। যে যার যার মত দান সদাকা করতে লাগলেন।
রাসূল (দ.) এর সামান্য আরাম বোধের কারণে সাহাবীগণ কিভাবে জান-মাল উৎসর্গ করতেন এটাই তার সামান্যতম নমুনা। সুবহান আল্লাহ ওয়া বিহামদিহি। রাসূল (দ.) এর রোগমুক্তির দিবস “আখেরি চাহার সোম্বা” দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে পারস্যসহ এশিয়ার পাক-ভারত উপমহাদেশে অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে আশেকে রাসূলগণ এ দিনটি পালন করে থাকে। অন্যান্য দিবসের তুলনায় মহৎ এ দিনটি পালিত হয় সম্পূর্ণ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে।
আসুন এই সফর মাসের শেষ বুধবার, যে দিনে হযরত মুহাম্মদ (দ:) রোগমুক্তির কারণে রাসুলুল্লাহ (সঃ) সহ সাহাবীগণের আনন্দ ও খুশির উৎসব পালন করেছেন আমরাও এইদিনে দান সদাকা, দোয়া, দরূদ, এবাদত বন্দেগী করে দয়াময় আল্লাহ পাকের নিকট দোয়া করি, আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের দেশ, জাতি ও সারা বিশ্বের মুসলমানদেরকে শান্তি ও মঙ্গল দান করেন।
সফর মাসের শেষ বুধবার রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর জীবনের শেষ বুধবার। তাসাউফ পন্থি বুযুর্গগন সফর মাসের এই দিনে আয়াতে শেফা ভিজানো পানি দিয়ে গোসল ও পান করে নিজের রোগ মুক্তি কামনা করতেন। তাসাউফ ফাউন্ডেশন এই নিয়ম পালন করে প্রতি বছর সফর মাসের শেষ বুধবার গোসল ও খাওয়ার দোয়া দিয়ে থাকেন। প্রত্যেক “আখেরী চাহার সোম্বা” মোমিন মুসলমানদের জন্য খুশির দিন বা পবিত্র দিন। কারণ এ দিনে মহানবী (দঃ) সুস্থ হয়ে সর্বশেষ গোসল করেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর স্বাচ্ছন্দ্যবোধ আশেকানদের মনের মুকুরে আনন্দের প্রস্রবন হয়ে ধরা দিতে থাকে। জনৈক আশেকে রাসূল এই অনুভূতির কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, ‘এই পৃথিবীতে যত খুশী, যত আনন্দ, যত সুখ, সম্ভোগ ও উপভোগের বিষয় এবং বস্তু রয়েছে এর সব একত্রিত করলেও রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উপশম বোধের আনন্দের হাজার ভাগের এক ভাগও হবে না।’
কোন কাফের নবীর সুস্থতায় আনন্দ করবেনা এটা ঠিক কিন্ত মুমিনের কাছে রাসুল পাক (দঃ) অসুস্থতা থেকে সুস্থ হওয়ার চেয়ে আর কি কোন আনন্দের দিন থাকতে পারে?
আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফে নবী করীম (দঃ) কে বলেন,,
وَلَن تَرْضَى عَنكَ الْيَهُودُ وَلاَ النَّصَارَى حَتَّى تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ
ইহুদী ও খ্রীষ্টানরা কখনই আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যন্ত না আপনি তাদের ধর্মের অনুসরণ করেন। সুরা বাক্বারা ২০
তাই আসুন আমরা এ দিনটিকে বেশি বেশি দান সাদকা ও নফল ইবাদাতের মাধ্যমে কাটিয়ে বাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রেজমন্দি ও আল্লাহ রহমত হাসিল করি। সূত্র – আদ-দীন ওয়া তারীখুল হারামাইনশি শারীফাঈন, পৃষ্ঠা – ২৮১, ২৮৩ ।
তাসাউফ ফাউন্ডেশন আখেরি চাহার সোম্বা উপলক্ষে একটি আমলের বই দিয়ে থাকেন। যাতে বুজর্গদের পঠিত কিছু দোয়াকে একত্রিত করে বই আকারে দেয়া হয়। যারা নিজেদের জীবনে বিভিন্ন রকম সমস্যায় আল্লাহর নিকট সাহায্যপ্রার্থী তারা আয়াতে ক্বোরআন ও হাদীসে রাসূল থেকে সংকলিত দোয়া সমুহ পাঠ করে উপকার গ্রহন করতে পারেন। এই দোয়ার বইতে রয়েছে নবী করিম সঃ কে স্বপ্নে দেখার আমল, শত্রু থেকে নিরাপদে থাকার দোয়া, সেহের যাদুটোনা কাটানোর দোয়া, বদনজর থেকে মুক্তির দোয়া, রিযিক বৃদ্ধির আমল, নবী করিম (সঃ) এর আমলকৃত কিছু দোয়া, বুজুর্গদের আমলকৃত কিছু দোয়া, আয়াতে শেফা সহ আরো বিভিন্ন আমল সমুহ। যারা এই দোয়ার বই সংগ্রহ করতে চান তারা তাসাউফ ফাউন্ডেশনকে কিছু অনুদান দিয়ে বইটি সংগ্রহের জন্য নিম্নে উল্লেখিত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম ফোনঃ ০১৭৭৫০১৪৩০০
সামশুর রহমান রাজু ফোনঃ ০১৮১৬৩৩৭৩৫৯
জাহাঙ্গীর আলম ফোনঃ ০১৫২১২১২৮৪৪
আখবাত হক সংগীতা ফোনঃ ০১৭৬৩১৫২৩৫৩
গ্রীন ব্যাগ প্রোগ্রামঃ
এবাদতের সুফল সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আয়াতসমূহের সঠিক ব্যখ্যার উপর নিভর করে। লক্ষনীয় যে, বেশির ভাগ মানুষ সঠিক জ্ঞান ছাড়া আয়াতসমূহ তেলওয়াত করে যদিও সকল বিষয় কোরআনে বর্নিত আছে। আলহাদি, যিনি একজন আধ্ম্যাতিক পথপ্রদর্শক, বহুদিন ধরে কোরআনের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কার্যকরি আয়াতের উপর কাজ করছেন। প্রত্যেক আরবি মাসের একটি আধ্ম্যতিক মূল্য রয়েছে এবং আলহাদি কিছু আয়াত একত্রিত করেছেন যার মাধ্যমে ঐ মাসের সর্বোচ্চ ফল পাওয়া যায়। উদহারণস্বরূপ, জীবনে সন্মান ও সম্পদ অর্জন করতে হলে কিছু আয়াত সফর মাসে পড়তে হয়। এবাদত মাধ্যমে আশানুরূপ ফলাফল পেতে হলে, সুফি ব্যক্তিরা প্রত্যেকদিন আল্লাহর নামে কিছু অর্থ দান করতেন। যা পরে সমাজের দুস্ত মানুষের জন্য ব্যয় করা হত। আলহাদী এই কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়ার জন্য গ্রীন ব্যাগ প্রোগ্রাম চালু করেন। অনুদান সংগ্রহের জন্য, একটি সবুজ বেগ সফর মাসে দেওয়া হয় এবং পরবর্তী বছর মহররম মাসের শেষ অবধি তাতে অর্থ জমা করেন। সুফিদের সম্মিলিত অর্থ পরবর্তি পর্যায়ে সারা বছর সমাজ কল্যানমূলক কাজে ব্যয় করা হয়; যেমন-খাদ্য বিতরণ, এতিমদের বিবাহ দেওয়া, বিভিন্ন্ ধর্মীয় উৎসব, স্বাস্থ্য সেবা, ধ্যান ও পবিত্রকরণ প্রোগ্রাম এবং অন্যান্য কল্যান মুলক কাজে ব্যয় করা হয়।